ভোরে ঘুম থেকে উঠার ৫ টি কৌশল ।

১. সঠিক সময়ে ঘুমাতে যাওয়া।

ভোরে ঘুম থেকে উঠার জন্য আপনাকে অবশ্যই ঠিক সময়ে ঘুমিয়ে পরতে হবে৷ কারণ রাতে পর্যাপ্ত ঘুম না হলে আপনি কখনোই ভোরে ঘুম থেকে উঠতে পারবেন না। একজন প্রাপ্তবয়স্ক ব্যাক্তির প্রতিরাতে ৬/৭ ঘন্টা ঘুমানো প্রয়োজন। আপনি যদি রাত ২, ৩ টার সময় ঘুমিয়ে ভোর ৫, ৬ টায় উঠতে চান অর্থাৎ ২, ৩ ঘন্টা ঘুমিয়ে উঠে পরতে চান তাহলে কখনোই এটা সঠিক সিদ্ধান্ত হবে না। কারণ আপনার শরীর পর্যাপ্ত ঘুম না পেলে নিস্ক্রিয় থাকবে৷ ফলে ভোরে ঘুম থেকে উঠা সম্ভব হবে না। যদি কখনো উঠেও পরেন তাহলে শরীর অনেক দুর্বল থাকবে এবং অসুস্থ হয়ে পরবেন। এতে কোনো কাজ সঠিকভাবে করা সম্ভব হবে না৷ তাই ভোর ৫/৬ সময় ঘুম থেকে উঠতে আপনাকে অবশ্যই সঠিক সময়ে অর্থাৎ ১১/১২ টার মাঝে ঘুমিয়ে পরতে হবে।

২. স্মার্ট এলার্ম ব্যবস্থা।

 

ভোরে ঘুম থেকে উঠার ৫ টি কৌশল 

অতিরিক্ত বার এলার্ম না দেওয়া

এলার্ম দেওয়ার সময় অতিরিক্ত বার এলার্ম দিবেন না। অতিরিক্ত বার এলার্ম দিলে আপনি কখনোই সঠিক সময়ে ঘুম থেকে উঠতে পারবেন না। কারণ ভোরে ঘুমের ঘোরে আপনার ব্রেন সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারবে না। তখন অনেকবার এলার্ম বাজলে আপনার ব্রেন ভাববে এখন সজাগ হওয়ার দরকার নেই আরো অপশন আছে। এতে করে প্রত্যেকবার আপনার ব্রেন এটাই বলে যাবে। এবং সঠিক সময়ে উঠতে দিবে না। কিন্তু একবার বা দুইবার এলার্ম দিলে আপনার ব্রেন জানবে অপশন একটাই। উঠলে এখনই উঠতে হবে। তাই অনেকবার এলার্ম দেওয়ার থেকে এক বা দুইবার এলার্ম দেওয়া বেশি কার্যকর।

২. এলার্ম-ঘড়ি বা ফোন দূরে রাখা।

আপনি ঘড়ি বা ফোন যেটাতেই এলার্ম দেন সেটা আশেপাশে না রেখে একটু দূরে রাখার চেষ্টা করবেন। যেমন বিছানার অনেকটা নিচে বা তালাবদ্ধ আলমারিতে। যেখান থেকে এলার্মের আওয়াজ স্পষ্ট পাওয়া যাবে কিন্তু উঠে গিয়ে এলার্ম বন্ধ করতে অনেকটা ঝামেলা হবে। এতে করে এলার্ম বন্ধ করতে করতে আপনার ঘুমের ঘোর কেটে যাবে। বন্ধ করে আবার গিয়ে শুয়ে পরতে ইচ্ছে করবে না।

৩. এলার্ম অ্যাপ ব্যবহার করা

বর্তমান সময়ে মোবাইল ফোনের কল্যাণে কিছু এলার্ম অ্যাপ তৈরি করা হয়েছে। যা ব্যবহার করে আপনি ভরে ঘুম থেকে উঠতে পারবেন। এই ধরনের অ্যাপে এরকম কিছু শর্ত দেওয়া থাকে যেমন এই এলার্ম বন্ধ করতে আপনাকে ঘরের কোনোকিছুর ছবি তুলে দিলে বা কোনো ক্যালকুলেশন সম্পন্ন করতে হবে, ইত্যাদি। এতে করে এসব শর্ত পূরণ করতে গিয়ে আপনার ঘুমের ঘোর কেটে যাবে।

এলার্মের ক্ষেত্রে উপরের তিনটির মাঝে আপনার সুবিধা মতো ব্যবহার করলে অবশ্যই আপনি ভোরে ঘুম থেকে উঠতে পারবেন।

৩. কারণ বের করা।

আপনি যেকোনো কাজই করতে চান তার জোরালো কারণ থাকতে হবে। নাহলে কোনো কাজই ফলপ্রসূ হবে না৷ অর্থাৎ ভোরে ঘুম থেকে উঠার ক্ষেত্রে আপনাকে এর কারণ জানতে হবে। বের হবে হবে আপনি এই কাজ করে কি পাচ্ছেন। আপনার লক্ষ্যকে সামনে রেখেই আপনাকে এগিয়ে যেতে হবে। আপনি ভোরে ঘুম থেকে উঠলে কি কি লাভ হবে, কতটুকু বেশি কাজ করতে পারবেন, নিজেকে কতটুকু পরিবর্তন করতে পারবেন। অথবা এইভাবে ভাবতে পারেন, আপনি উক্ত কাজটি না করলে কতটুকু হেরে যাচ্ছেন, নিজের কতটুকু ক্ষতি করছেন। অর্থাৎ ভোরে ঘুম থেকে না উঠলে আপনি আপনার ভবিষ্যতের কতটা ক্ষতি করছেন। যেভাবে ভাবলে আপনার কাজ হবে সেভাবেই ভাবেন।

৪. একটানা ঘুমানো।

রাতে কিভাবে তারাতাড়ি ঘুমাবো

আরো পড়ুন

ঘুমের ক্ষেত্রে আপনার কখনোই ভেঙে ভেঙে ঘুমানো উচিত নয়। অর্থাৎ একবার এক ঘন্টা ঘুমিয়ে কিছুক্ষণ পর আবার দুই ঘন্টা ঘুমানো, এরকম করা উচিত নয়। এতে পর্যাপ্ত ঘুমের অভাবে শরীর দুর্বল থাকবে এবং সারাক্ষণ ঘুম ঘুম ভাব থাকবে। একটা ভালো ঘুমের জন্য অবশ্যই আপনাকে একটানা ৬/৭ ঘন্টা ঘুমানো উচিত। আবার অনেক সময় অনেকে ২/৩ দিন একটানা না ঘুমিয়ে একদিনে ১৮ ঘন্টা ঘুমান। এটা শরীরের জন্য খুবই মারাত্মক। তাই আপনাকে প্রতিদিন সঠিক সময়ে ৬/৭ ঘন্টা ঘুমানো উচিত।

অনেক সময় অনেকে প্রয়োজনের থেকে বেশি ঘুমান। অর্থাৎ ১১/১২ ঘন্টা ঘুমানু হয়ে যায়। এক্ষেত্রে আপনার শরীর অনেক দুর্বল থাকবে। প্রয়োজনের থেকে কম ঘুমানো যেমন শরীরের জন্য ক্ষতিকর তেমনি প্রয়োজনের থেকে বেশি ঘুমানোও ক্ষতিকর। প্রয়োজনের থেকে বেশি ঘুমালে আপনার শরীর সক্রিয় থাকে না। ফলে সারাদিন ঘুম ঘুম ভাব থাকে। তাই প্রয়োজনের থেকে বেশি ঘুমানো উচিত নয়।

৫. কিছু অভ্যাসের পরিবর্তন।

ভোরে ঘুম থেকে উঠতে হলে আপনাকে কিছু বাজে অভ্যাস পরিত্যাগ করতে হবে এবং কিছু ভালো অভ্যাস গড়তে হবে। যেমন, ঘুমানোর উদ্দেশ্যে শুয়ে যদি ফোন ব্যবহার করুন তাহলে ফোনের আলো চোখে পরার ফলে ঘুম কেটে যাবে। আবার ফোন ব্যবহার করতে করতে অনেকটা সময় পার করে দিবেন। আর রাতে যখন ঘুম আসে তখন না ঘুমালে পরবর্তীতে ঘুম আসতে চায় না। যার জন্য সময় মতো ঘুমাতে পারবেন না। এবং রাতে ঘুম না হওয়ার ফলে ভোরে উঠতে পারবেন না। বর্তমান সময়ে বেশিরভাগ মানুষেরই ঘুমানোর সময় গান বা গজল শুনার অভ্যাস থাকে। কানে হেডফোন লাগিয়ে গান বা গজল চালু করে ঘুমানুর চেষ্টা করে৷ এই ধরনের অভ্যাস ত্যাগ করতে হবে। কারণ আওয়াজ শুনতে থাকলে আপনার ব্রেন কাজ করতে থাকবে যার ফলে সুন্দরভাবে ঘুম হবে না।

Leave a Comment