হাতের লিখা সুন্দর করার ৫টি কৌশল
উন্নত মানের লিখার একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে সুন্দর হাতের লিখা। হাতের লিখা সুন্দর ও সুস্পষ্ট না হলে লিখার মান যত ভালোই হোক এতে তেমন ফল পাওয়া যায় না। শিক্ষাজীবনে সুন্দর ও সুস্পষ্ট হাতের লিখা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের মাঝে অনেকেই আছেন যাদের হাতের লিখা অনেক অস্পষ্ট। অনেকের লিখা এতোটাই অস্পষ্ট যে নিজের লিখা নিজেই পড়তে পারেন না।
কিছু কৌশল অবলম্বন করলে হাতের লিখা সুন্দর ও সুস্পষ্ট করা সম্ভব। আসুন আমরা এমন ৫টি কৌশল জেনে নিই যা অবলম্বন করলে হাতের লিখা সুন্দর ও সুস্পষ্ট করা যাবে।
১. লাইন সোজা করে লিখা
হাতের লিখা সুন্দর হওয়ার একটি বড় বিষয় হচ্ছে লিখার লাইন সোজা হতে হবে। লাইন বাঁকা হলে লিখা যত স্পষ্টই হোক কখনো সুন্দর দেখাবে না। লাইন সোজা করতে একটি কার্যকরী পদ্ধতি হলো দাগ টানা খাতায় লিখা। দাগ টানা খাতায় লিখার চর্চা করলে লিখার লাইন সোজা হবে৷ বাজারে এরকম অনেক খাতা পাওয়া যায় যেখানে দাগ কাটা থাকে। আবার আপনি চাইলে নিজেই খাতায় দাগ কেটে লিখার চর্চা করতে পারেন। আবার স্কেল ধরে লিখলেও লিখার লাইন সোজা হবে। আপনার যেই পদ্ধতি সুবিধা সেই পদ্ধতি অবলম্বন করুন।
২. অক্ষর স্পষ্ট করে লিখা
সুন্দর লিখার জন্য বর্ণ স্পষ্ট হওয়া খুবই জরুরী। স্পষ্ট করে লিখার জন্য আপনাকে বর্ণমালার আকৃতি সম্পর্কে ধারণা থাকতে হবে। প্রত্যেকটি বর্ণের সম্পুর্ণ আকার দিতে হবে। আমাদের মধ্যে অনেকেই আছেন যারা সম্পুর্ণ বর্ণ না লিখে বর্ণের অর্ধেক বা অর্ধাধিক অংশ লিখেন। এতে লিখা মোটেই সুন্দর দেখায় না।
স্পষ্ট বর্ণ লিখার ক্ষেত্রে আরেকটি বিষয় খেয়াল রাখতে হবে। সেটি হচ্ছে বর্ণমালার মাত্রা। মাত্রা ভিত্তিক বর্ণমালা ৩ ধরণের হয়ে থাকে। পূর্ণমাত্রা, অর্ধ মাত্রা ও মাত্রাহীন। লিখা সুন্দর ও সুস্পষ্ট করার জন্য প্রত্যেকটি বর্ণের সঠিক মাত্রা ব্যাবহার করতে হবে।
৩. শব্দ ও লাইনের মাঝে সমান দুরত্ব বজায় রাখা
হাতের লিখা সুন্দর হওয়ার একটি বড় বিষয় হচ্ছে প্রত্যেকটি শব্দ ও প্রত্যেকটি লাইনের মাঝে সমান দুরত্ব বজায় রাখা। খেয়াল রাখতে হবে সেটা যাতে খুব বেশি বা কম না হয়৷ একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ জায়গা ফাঁকা রেখে লিখতে হবে৷ প্রত্যেক শব্দের মাঝে বর্ণের দূরত্ব সমান হতে হবে। খেয়াল রাখতে একটি শব্দের মাঝে যে কয়েকটি বর্ণ ব্যবহার করা হবে সেগুলোর প্রত্যেকটির দূরত্ব যাতে খুব বেশি বা কম না হয়। একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ দূরত্ব হতে হবে। প্রত্যেকটি বর্ণ সমান আকারে লিখতে হবে৷
একটি উন্নত মানের হাতের লিখায় সাধারণত প্রত্যেকটি লাইনে ৫-৬ টি শব্দ লিখা করা হয়। মাঝারি আকারের একটি পাতায় ১৫-১৭ টি লাইন লিখা যায়। এর থেকে বেশি বা কম হলে লিখা সুন্দর দেখায় না।
৪. কার, ফলা, চিহ্নের সঠিক ব্যবহার
লিখার একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো কার, ফলা ও চিহ্নের ব্যবহার। অনেকে আছেন যারা কার, ফলা ও চিহ্নগুলোকে প্রয়োজনের তুলনায় অনেকটা বড় বা ছোট করে লিখেন। এগুলো বড় বা ছোট করে লিখলে সঠিক ব্যবহার হয় না। আ-কার, ই-কার, উ-কার ইত্যাদি বা দাড়ি, কমা, কোলন ইত্যাদি এমন ভাবে লিখতে হবে যেন এই কারগুলো শুধু নির্দিষ্ট বর্ণ জুরে থাকে। একাধিক বর্ণের উপর যাতে না যায়। আবার কার, ফলা ও চিহ্নগুলো খুব ছোট হওয়া যাবে না৷ যতটুকু তার সঠিক জায়গা ততটুকুই দিতে হবে।
৫. নিয়মিত ও সময় নিয়ে লিখা
আমরা অনেকেই লিখার সময় খুব তারাহুরো করতে গিয়ে লিখার সৌন্দর্য নষ্ট করে ফেলি৷ তাছাড়া তারাহুরো করে লিখলে লিখা স্পষ্ট হয় না। তাই লিখা সুন্দর করতে অবশ্যই সঠিক সময় নিয়ে লিখতে হবে। ধীরে ধীরে লিখে লিখার চর্চা করতে হবে। ধীরে ধীরে লিখার গতি বৃদ্ধি করতে হবে।
সুন্দর হাতের লিখার জন্য অবশ্যই আপনাকে নিয়মিত লিখার চর্চা করতে হবে। ধৈর্য ধরে সময় নিয়ে প্রতিদিন হাতের লিখার জন্য সময় দিতে হবে। হাতে লিখা দুয়েকদিনে পরিবর্তন বা সুন্দর হওয়ার বিষয় নয়। হাতের লিখা সুন্দর করতে হলে প্রতিদিন চর্চা করতে হবে। নিয়মিত চর্চা করলে খুব দ্রুতই হাতের লিখা সুন্দর করা সম্ভব হবে।